৫ লাখ পর্যন্ত করমুক্ত আয়সীমার দাবি ডিসিসিআই’র

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

১৯ মার্চ ২০২৫, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১৯ মার্চ ২০২৫, ১২:০৪ এএম

বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা পাঁচ লাখে উন্নীত করার প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। বর্তমানে ব্যক্তি পর্যায়ে বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য সংস্থাটি আরও দেড় লাখ টাকা বাড়িয়ে কথা বলেছে সিপিডি।

 

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সভাপতির সভাপতিত্বে এনবিআর ভবনে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ প্রস্তাব তুলে ধরেন ডিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট তাসকীন আহমেদ। একই সঙ্গে সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশ রাখার প্রস্তাবনা দিয়েছেন তিনি।

 

তবে এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান। তিনি বলেন, উন্নত দেশে ব্যক্তি শ্রেণির কর ৫০-৫৫ শতাংশ। এটাকে কমানো ঠিক হবে না, বাড়াতে হবে। না হলে বৈষম্য কমবে না। উন্নত দেশে ব্যক্তির কর বেশি হওয়ায় বৈষম্য কম। এটা ঠিক তারা বেশি কর দিয়ে বেশি সেবা পান।

 

ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বাজেট প্রস্তাবনায় বলেন, করমুক্ত আয় পাঁচ লাখ টাকার পরবর্তী স্লাব ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের ৫ শতাংশ করহার করা দরকার। যেটা এখন এক লাখ টাকায় সীমাবদ্ধ করেছেন।

 

অনানুষ্ঠানিক খাত ব্যতীত একক মূসক হার এর প্রস্তাবনা রেখে বলেন, বর্তমানে স্ট্যান্ডার্ড মূসক (ভ্যাট) হার ১৫ শতাংশ, তবে বিভিন্ন খাতে তা কমিয়ে ১০ শতাংশ, ৭.৫ শতাংশ এবং ৫ শতাংশ করা হয়েছে। এভাবে বিভক্ত হার থাকার ফলে ব্যবসায়ীদের জন্য জটিলতা সৃষ্টি হয়, কর প্রশাসনের দক্ষতা ব্যাহত হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে বিরোধ দেখা দেয়। এর পরও উপকরণ রেয়াতের সুবিধা সবক্ষেত্রে নিশ্চিত না হওয়ায় অনেক ব্যবসায়ী বাড়তি করের বোঝা বহন করতে বাধ্য হন বলে মনে করেন তিনি।

 

তাসকীন আহমেদের দাবি, একক ব্যক্তির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ মূসক হার এবং অনানুষ্ঠানিক খাতের ব্যবসায়ীদের জন্যে এক শতাংশ নির্ধারণ করলে বর্তমান জটিলতা ও বিভ্রান্তি দূর হবে। এ হারে আসলে কর আহরণ সহজ এবং রাজস্ব আদায় বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।

 

এর আগে, বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ফাহমিদা খাতুন বলেন, জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী ছিল। খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতির তুলনায় খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার বেশি। এ ছাড়া, শহরের চেয়ে গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার অনেক বেশি। সাধারণ মানুষ সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে।

 

 এ পরিস্থিতিতে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো যৌক্তিক বলে আমরা মনে করি। আগামী অর্থবছর এটি বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করা উচিত।

 

বর্তমান ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের আয়ের প্রথম সাড়ে তিন লাখ টাকার ওপর কর নেই। পরের প্রথম এক লাখ টাকার জন্য ৫ শতাংশ, পরবর্তী ৪ লাখ টাকার জন্য ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ২০ শতাংশ এবং বাকি অর্থের ওপর ২৫ শতাংশ হারে কর বসে।

 

এ ছাড়া মহিলা করদাতা এবং ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা হলো চার লাখ টাকা। তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা এবং প্রতিবন্ধী স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার করমুক্ত আয়সীমা হবে পৌনে পাঁচ লাখ টাকা। গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা পাঁচ লাখ টাকা। আর প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবকের প্রত্যেক সন্তান বা পোষ্যর জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা আরও ৫০ হাজার টাকা বেশি হবে।

 

এদিকে, ঢাকা উত্তর সিটি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি এবং চট্টগ্রাম সিটির এলাকায় অবস্থিত করদাতার জন্য ন্যূনতম কর ৫ হাজার টাকা, অন্য সিটির করদাতার জন্য ৪ হাজার টাকা এবং সিটি করপোরেশন ব্যতীত অন্য এলাকার করদাতার জন্য ৩ হাজার টাকা দিতে হবে।


বিভাগ : অর্থনীতি


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

২৩ মার্চের মধ্যে ব্যাংকারদের বেতন-ভাতা পরিশোধের নির্দেশ
ঈদের আগে রেমিট্যান্সে সুবাতাস, ১৯ দিনে এলো সোয়া দুই বিলিয়ন ডলার
জাইকার অর্থায়নে সম্পন্ন যমুনা রেলসেতু উদ্বোধন দেশের রেল যোগাযোগে নতুন যুগের সূচনা
ঈদে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে আইএফআইসি ব্যাংকের উপহার বিতরণ
রূপালী ব্যাংকের ব্যবসায়িক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত
আরও
X

আরও পড়ুন

নতুন কোনো চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় দেখতে চায়না জনগন- অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন

নতুন কোনো চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় দেখতে চায়না জনগন- অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন

বিএনপি-ভারতের যৌথ সিদ্ধান্তে সাবের হোসেনের নেতৃত্বে নির্বাচনে যাবে আ'লীগ: বিস্ফোরক দাবি পিনাকীর

বিএনপি-ভারতের যৌথ সিদ্ধান্তে সাবের হোসেনের নেতৃত্বে নির্বাচনে যাবে আ'লীগ: বিস্ফোরক দাবি পিনাকীর

গাজা থেকে ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ

গাজা থেকে ইসরায়েলে রকেট নিক্ষেপ

নির্বাচন বিলম্বের সুযোগে  অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে পতিত স্বৈরাচার গোষ্টী : এমরান চৌধুরী

নির্বাচন বিলম্বের সুযোগে  অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে পতিত স্বৈরাচার গোষ্টী : এমরান চৌধুরী

২৩ মার্চের মধ্যে ব্যাংকারদের বেতন-ভাতা পরিশোধের নির্দেশ

২৩ মার্চের মধ্যে ব্যাংকারদের বেতন-ভাতা পরিশোধের নির্দেশ

শিশুদের ঝগড়া কেন্দ্র্ করে কাতার প্রবাসীকে খুন : প্রধান আসামী সাজু গ্রেফতার

শিশুদের ঝগড়া কেন্দ্র্ করে কাতার প্রবাসীকে খুন : প্রধান আসামী সাজু গ্রেফতার

টেসলা থেকে মাস্কের পদত্যাগের দাবি বিনিয়োগকারীদের

টেসলা থেকে মাস্কের পদত্যাগের দাবি বিনিয়োগকারীদের

সাবেক সেনা কর্মকর্তা-আমলাদের নিয়ে ‘জনতার দল’র আত্মপ্রকাশ

সাবেক সেনা কর্মকর্তা-আমলাদের নিয়ে ‘জনতার দল’র আত্মপ্রকাশ

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে অপতথ্য দিয়ে ধরা খেলেন আওয়ামীপন্থী সাংবাদিক

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে অপতথ্য দিয়ে ধরা খেলেন আওয়ামীপন্থী সাংবাদিক

ফরিদপুরে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ছাত্রদলের আহ্বায়ককে বহিষ্কার

ফরিদপুরে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ছাত্রদলের আহ্বায়ককে বহিষ্কার

পাঁচ শর্ত মেনে নতুন ভিসি নিয়োগের দাবি কুয়েট শিক্ষার্থীদের

পাঁচ শর্ত মেনে নতুন ভিসি নিয়োগের দাবি কুয়েট শিক্ষার্থীদের

ঈদের আগে রেমিট্যান্সে সুবাতাস, ১৯ দিনে এলো সোয়া দুই বিলিয়ন ডলার

ঈদের আগে রেমিট্যান্সে সুবাতাস, ১৯ দিনে এলো সোয়া দুই বিলিয়ন ডলার

৯ বছর জেল খেটে জামিন পেয়েও পরিবারের কাছে যাওয়া হলো না সাইফুল্লাহর

৯ বছর জেল খেটে জামিন পেয়েও পরিবারের কাছে যাওয়া হলো না সাইফুল্লাহর

কুড়িগ্রামে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ১৮ দিন বাড়িতে আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

কুড়িগ্রামে ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ১৮ দিন বাড়িতে আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

কুষ্টিয়াকে সবুজে ঢাকতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

কুষ্টিয়াকে সবুজে ঢাকতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

নওরোজে সমুদ্রভ্রমণ সহজতর করলো ইরান, প্রস্তুত বন্দরগুলো

নওরোজে সমুদ্রভ্রমণ সহজতর করলো ইরান, প্রস্তুত বন্দরগুলো

বরগুনায় ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেত্রীর ধর্ষণ চেষ্টা মামলা! প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

বরগুনায় ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেত্রীর ধর্ষণ চেষ্টা মামলা! প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ

ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলমান হত্যার প্রতিবাদে নোয়াখালীতে ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল

ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলমান হত্যার প্রতিবাদে নোয়াখালীতে ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল

‘মৌসুম শেষ’ দিবালার

‘মৌসুম শেষ’ দিবালার

একের পর এক হুমকি, নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত মার্কিন বিচারকরা

একের পর এক হুমকি, নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত মার্কিন বিচারকরা